দেবীদুর্গার রূপের বিবরণ পাওয়া যায় দেবীর ধ্যানমন্ত্রেই। মন্ত্রসহ দেবীর সেই রূপই বিস্তারিত বর্ণিত হল আজ।
ধ্যানমন্ত্র
জটাজুট সমাযুক্তাং অর্ধেন্দু কৃতশেখরাম্।
লোচনত্রয় সংযুক্তাং
পূর্ণেন্দু সদৃশাননাম্।।২।।
অতসীপুষ্প বর্ণাভাং
সুপ্রতিষ্ঠাং সুলোচনাম্।
নবযৌবন সম্পন্নাং সর্ব্বাভরণ
ভূষিতাম্।।৪।।
সূচারু দশনাং তদ্বৎ পীনোন্নত পয়োধরাম্।
ত্রিভঙ্গস্থান সংস্থানাং
মহিসাসুরমর্দীনিম্।।৬।।
মৃণালায়াত সংস্পর্শ দশবাহু
সমন্বিতাম্।
ত্রিশুলং দক্ষিণে ধ্যেয়ং
খর্গং-চক্রং ক্রমাদধঃ।।৮।।
তীক্ষ্ণবাণং তথা শক্তিং
দক্ষিণেষু বিচিন্তয়েৎ।
খেটকং পূর্ণচাপঞ্চ
পাশমঙ্কুশমেব চ।।১০।।
ঘণ্টাং বা পরশুং বাপি
বামতঃ সন্নিবেশয়েৎ।
অধস্থান মহিষং তদ্বৎবিশিরক্ষং
প্রদর্শয়েৎ।।১২।।
শিরোচ্ছেদোদ্ভবং তদ্বৎ
দানবং খর্গ পাণিনম্।
হৃদি শুলেন নির্ভিন্নং নির্যদন্ত্র
বিভূষিতম্।।১৪।।
রক্তারক্তী কৃতাঙ্গঞ্চ
রক্তবিস্ফুরিতেক্ষণম্।
বেষ্টিতং নাগপাশেন ভ্রূকুটি
ভীষণাননাম্।।১৬।।
সপাশ বামহস্তেন ধৃতকেশঞ্চ
দুর্গয়া।
বমদ্রুধির বক্ত্রঞ্চ
দেব্যা সিংহং প্রদর্শয়েৎ।।১৮।।
দেব্যাস্তু দক্ষিণাং
পাদং সমং সিংহোপরিস্থিতম্।
কিঞ্চিৎ ঊর্ধ্বং তথা
বামঅঙ্গুষ্ঠং মহিষোপরি।।২০।।
স্তুয়মানঞ্চ তদ্রূপ
মমরৈঃ সন্নিবেশয়েৎ।
প্রসন্নবদনাং দেবীং
সর্ব্বকাম ফলপ্রদাং।।২২।।
উগ্রচন্ডা প্রচন্ডা চ চন্ডোগ্রা
চন্ডনায়িকা।
চন্ডা চন্ডবতী চৈব চন্ডরূপাতিচন্ডিকা।।২৪।।
অষ্টাভি শক্তিভিরষ্টাভিঃ
সততং পরিবেষ্টিতাম্।
চিন্তয়েৎ জগতাং ধাত্রিং
ধর্মকামার্থ মোক্ষদাম্।।২৬।।
ব্যাখ্যা
দেবীর মাথায় জটা, সাথে
অর্ধচন্দ্রের মত কপাল। পূর্ণিমার চাঁদের মত মুখ তাঁর ও গায়ের রঙ অতসীফুলের
মতো। তিনি সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত এবং তাঁর সর্বাঙ্গ বিভিন্ন অলঙ্কার দ্বারা ভূষিত। ।২-৪।
তাঁর দাঁত সুন্দর এবং
ধারালো, স্তন সম্পূর্ণ। তিন ভাঁজে দাঁড়িয়ে তিনি দৈত্য নিধন করছেন। দশহাতভর্তি
অস্ত্র তাঁর যা দেখতে শাখা-প্রশাখা সমন্বিত পদ্ম গাছের মতো। ডানদিকের উপরের হাতে
অবস্থান করে ত্রিশুল, তারপর ক্রমান্বয়ে খর্গ এবং চক্র। ।৬-৮।
দেবীর দক্ষিণের সর্বনিম্ন
দুই হাতের অস্ত্র ধারালো তীর এবং বর্শা। দেবীর ধ্যানে বর্ণিত হয় তাঁর বাঁ হস্ত। সেদিকে
সবচেয়ে নিচের হাতে থাকে চামড়ার ঢাল ও তার উপরের হাতে ধনুক। সেগুলির উপরের হাতে
থাকে সর্প, অঙ্কুশ এবং কুঠার (ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে)। দেবীর পায়ের কাছে
দৈত্যরাজের মাথার স্থান। ।১০-১২।
মহিষের কাটা মাথা থেকে মহিসাসুরের দেহ
অর্ধেক উত্থাপিত, হাতে তাঁর খর্গ এবং হৃদয়ে দেবীর ত্রিশূল দ্বারা
বিদ্ধ। তাঁর পেট থেকে নাড়িভূঁড়ি নির্গত হয়েছে। শরীর রক্তলিপ্ত। দেবীর হাতে ধরা সাপ
দ্বারা অসুরের দেহ বেষ্টিত। তবে উত্থিত ভ্রূ তে দৈত্যের রূপও ভয়ঙ্কর। ।১৪-১৬।
দেবী তাঁর বাম হাত
দিয়ে দৈত্যরাজের চুল টেনে রেখেছেন। দেবীর ডান পা বাহন সিংহের উপরে এবং বাঁ পা
কিঞ্চিৎ উর্ধে মহিষের উপরে অবস্থান করে। প্রবল যুদ্ধরত অবস্থাতেও দেবী তাঁর
শান্তিপূর্ণ মুখাবয়ব ও আশীর্বাদী রূপ বজায় রেখেছেন এবং সমস্ত দেবতা দেবীর এই
রূপের স্তুতি করেন। ।১৮-২২।
দেবীর উপরোক্ত রূপ দেবতাদের
আট শক্তি উগ্রচন্ডা, প্রচন্ডা, চন্ডোগ্রা, চন্ডনায়িকা, চন্ডা, চন্ডবতী, চন্ডরূপ ও অতিচন্ডিকা
দ্বারা পরিবেষ্টিত। গৃহকর্তার মানব জীবনের সমস্ত ইচ্ছা পূর্ণ করেন এই দেবী। তাই ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ লাভের জন্য
জগন্মাতৃকা দেবী দুর্গার ধ্যানই মানবজাতির হওয়া উচিত। ।২৪-২৬।
বি.দ্র. : দেবীর ধ্যানমন্ত্রের তৃতীয়
ছত্রে দেবীর গায়ের রং অতসীপুষ্পের মতো বলে বর্ণিত হয়েছে, তবে অনেক ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রমও
লক্ষ্য করা যায়। ‘তপ্ত কাঞ্চন বর্ণাভাং’
অর্থাৎ তপ্ত বা গরম গলিত সোনার সঙ্গেও দেবীর গায়ের রঙের তুলনা করা হয়েছে বিভিন্ন
শাস্ত্রে। তবে এই দুটিই বহুল প্রচলিত এবং দেবীপ্রতিমাতেও দু’রকম রঙেরই ব্যবহার
দেখা যায়, ফলে যে কোনোটিই সঠিক বলে বিবেচিত।
Oswm
ReplyDeleteখুব সুন্দর লিখেছেন
ReplyDeleteখুব সুন্দর লিখেছেন
ReplyDeleteBha
ReplyDeleteAtashi puspa kon fuler naam
ReplyDeleteঅনেক ধন্যবাদ
ReplyDeleteস্তোত্রে অনেকগুলি ভুল আছে। এগুলি ঠিক করুন।
ReplyDeleteসাধু প্রচেষ্টা।
🙏🙏🙏🙏🙏
ReplyDelete