দশমহাবিদ্যা হল মহাদেবীর দশটি বিশেষ দেহধারণ বা রূপ যার
উল্লেখ পাওয়া যায় তন্ত্রে। মহাবিদ্যা কথার অর্থ মহান জ্ঞান। জগৎ প্রতিপালক
নারায়ণের দশাবতার এর কথা আমরা সকলেই জানি, কিন্তু এটা অনেকেই জানি না
যে দেবীর দশ রূপের প্রত্যেকটিই নারায়ণের ঐ অবতার গুলিরই নারীরূপ। সৃষ্টির দশটি
প্রধান বিষয়ও দেবীর এই দশ রূপের মাধ্যমে ফুটে ওঠে। দশমহাবিদ্যার রূপের একদিকে যেমন
রয়েছে ভয়ঙ্করী রূপ, অন্যদিকে তেমনই আছে মোক্ষ
ও অভয়দায়িনী রূপ। দেবীর এই দশ রূপের স্বল্প বর্ণনা এবং নারায়ণের দশাবতারের সঙ্গে
দশমহাবিদ্যার সম্ভাব্য রূপের ব্যাখা রইল নিচে।
১. কালী -
ব্রহ্মের চূড়ান্ত রূপ এই দেবী দুঃখ-কষ্ট ও ভাবাবেগ দূর করেন সময়ের দৈর্ঘ্য
অপরিবর্তনীয়তা নিয়ন্ত্রণ করেন - নারায়ণের কৃষ্ণ অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
২. তারা - ইনি
নীল সরস্বতী নামেও পরিচিত; শব্দ-শক্তি-সময়-বিবেক-বুদ্ধি
ও বিবেচনার সকরুণ দেবী ইনি - নারায়ণের মৎস্য অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
৩. ষোড়শী - দেবী
পার্বতীর তান্ত্রিক রূপধারী এই দেবী আন্তরিক সৌন্দর্যের ঐশ্বরিক রূপের প্রতীক
(ললিতা বা ত্রিপুরাসুন্দরী নামেও জ্ঞাত) - নারায়ণের পরশুরাম অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
৪. ভৈরবী - দেবী
দুর্গা এখানে প্রচণ্ডা, যাঁর মায়া ও
ঐশ্বরিক শক্তি আদিম ক্ষমতা ধ্বংস করে - নারায়ণের কল্কি অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
৫. ভুবনেশ্বরী - জগৎ
সৃষ্টিকারিণী দেবী বিশ্বমাতৃকা যাঁর বিস্তার অসীম - নারায়ণের বামন অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
৬. ছিন্নমস্তা - নিজ
মস্তক ছেদনকারী রুপে এটিই দেবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও প্রচণ্ড অবতার - নারায়ণের নৃসিংহ অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
৭. ধূমাবতী - নিজেকে বিধবা করেন যে দেবী, বৈধব্য
বা মৃত্যুর দেবী; এই রূপ অসম্পূর্ণতা, বিষণ্ণতা, ক্ষতি
যন্ত্রণা প্রভৃতি নেতিবাচক দিক প্রকাশ করে - নারায়ণের বরাহ অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
৮. বগলামুখী -
বাকশক্তির দেবী মা কালীর হিংস্র রূপ যিনি নিষিদ্ধ তন্ত্রের ভয়ংকর দেবী বলেও পরিচিত
- নারায়ণের কূর্ম
অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
৯. মাতঙ্গী -
তান্ত্রিক সরস্বতী যিনি শক্তিশালী চিন্তা গঠন করতে সক্ষম সত্য বোঝার ক্ষমতা প্রদান
করেন - নারায়ণের রাম অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
১০. কমলা - দেবী তান্ত্রিক লক্ষ্মী যাঁর
ঐশ্বরিক প্রকৃতি, আলো, প্রেম
ও সৌন্দর্য জড়জগৎ উদ্ভাসিত করে - নারায়ণের বুদ্ধ অবতারের সম্ভাব্য নারীরূপ।
No comments:
Post a Comment